প্রকাশ: রবিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ১১:২৬ এএম (ভিজিটর : )
ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা ছিলেন অঞ্জনা রহমান। তার মৃত্যতে গভীর শোক প্রকাশ করছেন তারকারা। বরেণ্য এই অভিনেত্রীর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন চিত্রনায়িকা শাবনূর।
প্রিয় সহকর্মীর মৃত্যুতে অস্ট্রেলিয়া থেকে ফেসবুকে শনিবার (৪ জানুয়ারি) পোস্টে বলেন, আমার অগ্রজ সহকর্মী, জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা ও নৃত্যশিল্পী শ্রদ্ধেয় অঞ্জনা রহমান আর আমাদের মাঝে নেই, (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজউন)।
এরপর তিনি লেখেন, এই তো মাত্র দুই সপ্তাহ আগে আমার জন্মদিনে, আমাদের কিছু ছবি পোস্ট করে উইশ করে লিখেছিলেন, শুভ জন্মদিন আমাদের বাংলা চলচ্চিত্রের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শীর্ষস্থানীয় মহাতারকা। ৮০’র দশকের পর সিনেপ্রেমী দর্শকদের মাঝে যখন একঘেয়েমি, বিষণ্ণতা ভর করেছিল, তখন যে কয়েকজন লাস্যময়ী নায়িকার আবির্ভাব ঘটেছিল তাদের মধ্যে শাবনূর ছিল অনন্য। অনেক ভালোবাসা ও নিরন্তর শুভকামনা সবসময় তোমার জন্য।
শাবনূর আরো লেখেন, আমাদের সকলের প্রিয় অঞ্জনা আপার এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করা গুণী এই শিল্পীর অকাল মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।
শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এফডিসিতে নেয়া হয় তার মরদেহ। লাশবাহী গাড়ি এফডিসিতে পৌঁছানোর পর ভারি হয়ে ওঠে পুরো চত্বর। কান্নায় ভেঙে পড়েন দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা।
অঞ্জনাকে শেষ বিদায় জানাতে এফডিসিতে এসেছিলেন নায়ক আলমগীর, উজ্জ্বল, ইলিয়াস কাঞ্চন, মিশা সওদাগর, মেহেদী, জয় চৌধুরী, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস, রিয়ানা রহমান পলি, অভিনয়শিল্পী সুব্রত, নাসরিন, রোমানা মুক্তি, পরিচালক ছটকু আহমেদ, শাহিন সুমন, মুশফিকুর রহমান গুলজার, চয়নিকা চৌধুরীসহ চলচ্চিত্র ও অভিনয় জগতের অনেকে।
বেলা ১টার দিকে এফডিসিতে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তার মরদেহ নেয়া হয় চ্যানেল আই প্রঙ্গনে। দুপুর আড়াইটার দিকে সেখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বনানী কবরস্থানে বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সোনালি দিনের নন্দিত অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান।
১৯৮১ সালে ‘গাংচিল’ এবং ১৯৮৬ সালে ‘পরিণীতা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য দুইবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। এছাড়া মোহনা (১৯৮৩), পরিণীতা (১৯৮৬) এবং রাম রহিম জন (১৯৮৯) চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে তিনবার বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন।
চলচ্চিত্র জগতে আসার আগে তিনি একজন নামী নৃত্যশিল্পী ছিলেন। অঞ্জনার অভিনয় জীবন শুরু হয় ১৯৭৬ সালে বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’ চলচ্চিত্র দিয়ে। তবে তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র শামসুদ্দিন টগর পরিচালিত দস্যু বনহুর (১৯৭৬)। রহস্য ভিত্তিক এই ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন সোহেল রানা।
১৯৭৮ সালে তিনি আজিজুর রহমান পরিচালিত ‘অশিক্ষিত’ চলচ্চিত্রে নায়ক রাজ রাজ্জাকের বিপরীতে লাইলি চরিত্রে অভিনয় করেন। রাজ্জাকের বিপরীতে তিনি ৩০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।