যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের ভয়াবহ দাবানলে কমপক্ষে ১৬ জনের মৃত্যু এবং হাজার হাজার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হওয়ার ঘটনায় তদন্তকারীরা আগুনের সম্ভাব্য বিভিন্ন উৎস খতিয়ে দেখছেন। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এ খবর জানিয়েছে।
উচ্চবিত্ত এলাকা প্যাসিফিক প্যালিসেডসে হলিউড তারকা জেমি লি কার্টিস এবং বিলি ক্রিস্টালের মতো ব্যক্তিরা বসবাস করতেন। অনেকেই নিজেদের বাড়ি হারিয়েছেন। সেখানকার আগুনের উৎপত্তি স্থান হিসেবে পিয়েদ্রা মোড়াদা ড্রাইভের একটি বাড়ির পেছনের বনাঞ্চলকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জাতীয় ফায়ার প্রোটেকশন অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে দাবানলের সবচেয়ে সাধারণ কারণ বজ্রপাত। তবে, প্যালিসেডস এলাকা বা ইস্ট লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির ইটন ফায়ার অঞ্চলে বজ্রপাতের কোনও রেকর্ড নেই, যা এই সম্ভাবনাকে বাতিল করেছে।
দাবানলের পরবর্তী দুটি সাধারণ কারণ হলো ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগানো এবং বিদ্যুতের তার থেকে সৃষ্ট আগুন।
ফ্লোরিডাভিত্তিক সায়েন্টিফিক ফায়ার অ্যানালাইসিস প্রতিষ্ঠানের মালিক জন লেন্তিনি। তিনি ১৯৯১ সালের ওকল্যান্ড হিলস ফায়ারসহ ক্যালিফোর্নিয়ার বড় বড় দাবানলের তদন্ত করেছেন। তার মতে, এই আগুন একসময় ছোট ছিল। তদন্তকারীরা আগুনের উৎপত্তি স্থানে মনোযোগ দেবেন এবং এর কারণ অনুসন্ধান করবেন।
এখনও পর্যন্ত আগুন ইচ্ছাকৃতভাবে লাগানোর কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আর বিদ্যুতের তার থেকেও আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তবে, সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া এডিসন ইটন ফায়ার সম্পর্কিত একটি রিপোর্ট ক্যালিফোর্নিয়া পাবলিক ইউটিলিটিজ কমিশনে (সিপিইউসি) দাখিল করেছে। তারা জানিয়েছে, আগুন শুরুর সময় তাদের বৈদ্যুতিক সরঞ্জামে কোনও ত্রুটি বা অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, দাবানলের অন্যান্য সম্ভাব্য কারণের মধ্যে ধ্বংসাবশেষ পোড়ানো, আতশবাজি এবং দুর্ঘটনাজনিত ঘটনার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। ২০২১ সালে একটি জেন্ডার রিভিল অনুষ্ঠানের সময় দুর্ঘটনাজনিতভাবে দাবানল ছড়িয়ে পড়ে, যা ৩৬ বর্গমাইল এলাকা ধ্বংস করে এবং একজন দমকলকর্মীর প্রাণহানি ঘটায়।
বর্তমানে ইটন ও প্যালিসেডস ফায়ারের আগুন কম সংযত অবস্থায় জ্বলছে। আবহাওয়া কিছুটা শান্ত থাকলেও বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। লেন্তিনি বলেন, আগুন তখনই থামবে যখন এর জ্বালানি ফুরিয়ে যাবে বা আবহাওয়া বাধা সৃষ্টি করবে।