দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম নগরে অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ থাকায় অনুমোদনহীন ও নকশাবহির্ভূত ভবন নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। এবার অনুমোদনহীন এসব ভবনের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এজন্য টিম গঠন করা হয়েছে। শিগগিরই শুরু হবে অভিযান।
সিডিএ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের জুনের পর থেকে নগরে অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রয়েছে। এ সুযোগে নকশাবহির্ভূত ও অনুমোদনহীন অনেকগুলো ভবন গড়ে উঠেছে। সেইসঙ্গে ভবন নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ উঠায় অভিযানে নামছে সিডিএ। অভিযান জোরদার করতে সিডিএর দুই অফিসারের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে দুটি ভিজিল্যান্স টিম। ইতিমধ্যে একটি টিম মাঠে নামলেও অপরটি আগামী সপ্তাহের শুরুতে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে সিডিএ। তবে এখনও উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়নি। টিমগুলো সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে তথ্য সংগ্রহের পর উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস। তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিত নগর গড়তে নকশাবহির্ভূত ভবন অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অনুমোদনহীন এবং নকশাবহির্ভূত ভবন চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিডিএর দুই অফিসারকে প্রধান করে দুটি ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে। একটি টিম কাজ শুরু করেছে। অপরটিও শুরু করবে।’
সিডিএর গঠিত একটি ভিজিল্যান্স টিমের প্রধান মোহাম্মদ হাসান বলেন, ‘গঠিত দুটি ভিজিল্যান্স টিমের মধ্যে একটি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। আমাদের টিম আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে কাজ শুরু করবে। এজন্য সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করছি, সমন্বয় করে কাজ করবো আমরা।’
নগরে কোনও ভবন কিংবা স্থাপনা নির্মাণ করতে হলে সিডিএ থেকে অনুমোদন নিতে হয় উল্লেখ করে মোহাম্মদ হাসান বলেন, ‘কেউ কেউ এ নিয়ম না মেনে ইচ্ছেমতো স্থাপনা তৈরি করেছেন। আবার কেউ নকশার অনুমোদন নিয়েছেন একরকম, ভবন নির্মাণ করেছেন ভিন্ন। এসব নকশাবহির্ভূত ভবনের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবো আমরা।’
গত কয়েক মাসে কতটি এমন ভবন তৈরি হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সে তালিকা আমরা এখনও করিনি। সরেজমিনে মাঠে গিয়ে তালিকা তৈরি করলে বোঝা যাবে, নকশাবহির্ভূত ও অনুমোদনহীন কতটি ভবন আছে।’
নগরে নকশাবহির্ভূত ও অনুমোদনহীন কতটি ভবন আছে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম বলেন, ‘সেটি তালিকা দেখে বলতে হবে। তবে পরিকল্পিত নগর গড়তে অনুমোদনহীন ও নকশাবহির্ভূত ভবন অপসারণের বিকল্প নেই। নানা কারণে গত কয়েক মাস অবৈধ এবং নকশাবহির্ভূত স্থাপনার বিরুদ্ধে অভিযান কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এখন থেকে নিয়মিত মনিটরিং করা হবে। যাতে নতুন করে কেউ নকশাবহির্ভূত ভবন নির্মাণ করতে না পারে। যেগেুলো হয়েছে সেগুলো উচ্ছেদ করা হবে।’
সিডিএ জানিয়েছে, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ অনুযায়ী নতুন ভবন নির্মাণকাজ শুরুর বা স্থগিত কাজ শুরুর ১৫ দিন আগে সিডিএকে জানানোর কথা থাকলেও তা করেন না অধিকাংশ ভবন মালিক।
সিডিএর বোর্ড সদস্য স্থপতি সৈয়দা জেরিনা হোসাইন বলেন, ‘বিগত সময়ে চট্টগ্রামে ভবন নির্মাণে নিয়ম মানা হয়নি। এভাবে চলতে দেওয়া উচিত নয়। এখন সব কিছু নিয়মের মধ্যে আসা উচিত।’