ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ‘বিএনপির সাম্প্রতিক বক্তব্যের সঙ্গে আগের বক্তব্যের মিল নেই। তারা আমাদেরও ফ্যাসিস্টের সহযোগী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের আমলে বিতর্কিত কোনও নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন অংশগ্রহণ করেনি। জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচনকে আমরা এক মনে করি না।’
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের শিল্পকলা একাডেমিতে ইসলামী আন্দোলনের জেলা ও মহানগরের সম্মেলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘গত স্থানীয় নির্বাচনে সবাই অংশগ্রহণ করেছেন, কেউ নামে কেউ আবার বেনামে অংশগ্রহণ করেছেন, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সবাই অংশগ্রহণ করেছেন। আমরা সরাসরি ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। সেই নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর অনেকে চেয়ারম্যান হয়েছেন। বিএনপির হাজারো উদাহরণ রয়েছে যারা সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন অংশগ্রহণ করে নাই। সুতরাং কেউ যদি মনে করে ইসলামী আন্দোলন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সহযোগী ছিল, আমি মনি করি এটা তাদের তথ্যের ভুল রয়েছে। এই বক্তব্যটা দ্বিতীয়বার পর্যালোচনা করার দাবি জানাই।’
সম্প্রতি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। বিষয়টি নিয়ে ফয়জুল করীম বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন মানবতার স্বার্থে সবার সঙ্গে ঐক্য হতে রাজি আছে। তবে জামায়াতের আমির ওই দিন অফিসিয়ালি চরমোনাই যাননি। রবিশালে ওনার একটা প্রোগ্রাম ছিল, সেখান থেকে সাক্ষাৎ করার জন্য তিনি চরমোনাই গিয়েছিলেন। যেহেতু তিনি একজন মেহমান হিসেবে সেখানে গিয়েছিলেন, তাই তাকে শ্রদ্ধা-সম্মান ও আতিথেয়তা করেছি। তবে সেখানে কোনও রাজনৈতিক আলোচনা হয়নি। সেখানে আমাদের শ্রদ্ধাভাজন আমির বলেছেন, ইসলামের পক্ষে একটা বাক্স দিতে চাই। যদি ইসলামের পক্ষে একটা বাক্স দিই, তাহলে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ দেশের ৯২ শতাংশ লোক ইসলামের পক্ষে ভোট দেবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘এনজিওর কায়দায় নরম কথা বললে দেশ চলবে না। শাসকের কায়দায় কথা বলতে হবে। নরম নরম কথা বললে এ দেশের মানুষকে শাসন করতে পারবেন না। নরমও লাগবে গরমও লাগবে। তবে ইনসাফভিত্তিক নরম গরম লাগবে। আর যদি জুলুম করেন বাংলাদেশের মানুষ আপনার বিরুদ্ধে আবারও আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর চেষ্টাও করবেন না। এটা করলে আপনারা ভুল করবেন।’
সংস্কার ব্যতীত নির্বাচন হলে প্রশ্নবিদ্ধ হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সবাই শুধু নির্বাচন চায়। নির্বাচন চায় না এমন কোনও রাজনৈতিক দল নেই। আমরা সাবই নির্বাচনমুখী। তবে নির্বাচন কবে দেবেন, কালকে? আগামীকাল যদি নির্বাচন দেন সেটা কি সুষ্ঠু হবে? গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে কী লাভ হবে। সংস্কারের আগে যদি নির্বাচনে দেন সেই নির্বাচন তো প্রশ্নবিদ্ধ হবে। মানুষের আশা এবং আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হবে না।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, ঢাকা বিভাগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ দ্বীন ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ মহানগর সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।