প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৩:১৪ পিএম (ভিজিটর : )
জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা বন্ধের পরিকল্পনা করছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য নিবেদিত জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ'তে অর্থায়ন স্থগিতের মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তার বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
পলিটিকো ও এনপিআরসহ একাধিক মার্কিন সংবাদমাধ্যমে সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, জাতিসংঘের সংস্থা দুটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার অবসান ঘটাতে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করতে পারেন ট্রাম্প। ওইদিনই আবার ফিলিস্তিন ইস্যুতে জাতিসংঘের ভূমিকার অন্যতম সমালোচনাকারী ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্র সফরে আসছেন।
২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতা নেওয়ার পর প্রথম মেয়াদের মতই কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন ট্রাম্প। যেমন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনা, যা বাইডেন প্রশাসন বাতিল করে দিয়েছিল।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ইউএনআরডব্লিউএ দাবি করেছে, গাজায় ১৫ মাসের ইসরায়েলি আগ্রাসনে সংস্থাটির অন্তত ২৭২ জন কর্মী নিহত হয়েছেন। এ সময়, ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় নেওয়া বিভিন্ন স্কুলভবনসহ সংস্থাটির বিভিন্ন অবকাঠামোতেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গত অক্টোবরে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে দুটি প্রস্তাব অনুমোদিত হয়, যা ইসরায়েলের অভ্যন্তরে এবং অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে ইউএনআরডব্লিউএ'র কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। ১৯৪৯ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠিত সংস্থাটি গাজা, অধিকৃত পশ্চিম তীর, অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেম, সিরিয়া, লেবানন এবং জর্ডানে লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে ত্রাণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে আসছে।
ইউএনআরডব্লিউএ'র বৃহত্তম অনুদান প্রদানকারী দেশ ছিল যুক্তরাষ্ট্র। তাদের সহায়তার আকার ছিল বার্ষিক ৩০ থেকে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার। তবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করে চালানো হামাসের হামলায় সংস্থাটির কর্মীরাও জড়িত ছিল বলে তেল আবিব অভিযোগ করার পর তিনমাস পর জানুয়ারিতে অনুদান বন্ধ করে দেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
স্বাধীন একটি প্রতিবেদনে পরে দাবি করা হয়, জাতিসংঘের কাছে কোনও প্রমাণ উপস্থাপন করেনি ইসরায়েল। তবে পরবর্তীতে জাতিসংঘ জানিয়েছে, নয়জন কর্মী ওই হামলায় জড়িত থাকতে পারে এবং তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে।
ইসরায়েল ও হামাসের নাজুক যুদ্ধবিরতি চুক্তি বহাল থাকাকালীন গাজার পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে ইউএনআরডব্লিউএ।
গত ১৫ জানুয়ারি স্বাক্ষরিত হওয়ার চারদিন পর কার্যকর হয় গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি। চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনা করার কথা ট্রাম্পের।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সোমবার পদার্পণ করেছেন নেতানিয়াহু। তার আগমনের পর ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি বহাল থাকবে, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই।