প্রকাশ: শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫, ১০:২০ পিএম (ভিজিটর : )
রাজধানীর হাতিরপুলে র্যাব পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনায় মাইক্রোসহ আট জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির নিউমার্কেট থানা পুলিশ। পুলিশ বলছে তার সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য।
শনিবার (৮ মার্চ) ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো— মো. আল আমিন হাওলাদার (৪০), মো. ওমর ফারুক (৩৪), মো. ফারুক বেপারী (৩৯), মো. শহিদুল ইসলাম শেখ (৪১), মো. মানিক (২৭), জহিরুল ইসলাম জহির (৪৮), আল-আমিন আহম্মেদ (৪০) ও মো. বারেক (৪৪)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রো, র্যাবের জ্যাকেট, হাতকড়া, হকিস্টিক, বেতের লাঠি, নগদ ৩০ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন ও কিছু প্রসাধনী সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
ডিসি তালেবুর রহমান জানান, ভিকটিম মো. ফারুক মিয়া (৫৫) গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক ২টার দুবাই থেকে ঢাকা এয়ারপোর্টে পৌঁছেন। তিনি এয়ারপোর্ট থেকে বাসার উদ্দেশে একটি প্রাইভেটকারে করে রওনা করেন। এসময় তার সঙ্গে ছিল দুবাই থেকে আনা ১০০ গ্রাম স্বর্ণের কয়েকটি চুড়ি, দুটি স্যামস্যাং এস-২৫ আল্ট্রা মোবাইল ফোন, একটি আইফোন ১২, একটি অ্যাপল ম্যাকবুক, একটি আইপ্যাড, একটি অ্যাপল ওয়াচ, তিনটি কম্বল ও বিভিন্ন ধরনের মালামাল। যার আনুমানিক মূল্য ১৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ফারুক মিয়া রাত আনুমানিক ৩টায় নিউমার্কেট হাতিরপুল রোডে অবস্থিত তার বাসার সামনে এলে তাকে অনুসরণ করা একটি কালো রঙের নোহা গাড়ি তার পথরোধ করে। এরপর গাড়ি থেকে র্যাবের পোশাক পরা ৫ থেকে ৬ জন নেমে র্যাব পরিচয় দিয়ে ফারুক মিয়াকে জোর করে গাড়ি থেকে নামায় এবং তার সঙ্গে থাকা মালামাল তাদের গাড়িতে নিয়ে চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, তারা ভিকটিম ফারুককে গাড়িতে করে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে এবং ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। পরবর্তী সময়ে ভোর সাড়ে ৪টায় ভিকটিমের মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে তাকে হাতিরঝিল এলাকায় গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় ওইদিন ভিকটিম মো. ফারুক মিয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিএমপির নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলার সূত্র ধরে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
থানা সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতার ব্যক্তিরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বিদেশ থেকে স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে আসা যাত্রীদের বিমানবন্দর থেকে অনুসরণ করে রাজধানীতে তাদের সুবিধাজনক স্থানে পথরোধ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা র্যাব, ডিবি ইত্যাদি পরিচয় দিয়ে সর্বস্ব ডাকাতি করে নেয়। এভাবে উক্ত ডাকাত চক্রটি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আনুমানিক ১২ থেকে ১৩টি ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।
রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় করে পুলিশ জানায়, দেশের বিভিন্ন থানায় গ্রেফতার মো. ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে ছিনতাই ও ডাকাতিসহ মোট চারটি, মো. ফারুক বেপারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ডাকাতির মোট দুটি, মো. শহিদুল ইসলাম শেখের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে ও ডাকাতিসহ মোট সাতটি, মো. মানিকের বিরুদ্ধে ছিনতাই, দস্যুতা, ডাকাতি ও মাদকসহ মোট ৯টি, জহিরুল ইসলাম জহিরের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে ও ডাকাতিসহ মোট ১২টি, আল-আমিন আহম্মেদের বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি ও মাদকসহ মোট পাঁচটি, মো. বারেকের বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ ও অস্ত্র আইনসহ মোট ১৪টি মামলা রয়েছে।