প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫, ১০:১৫ পিএম (ভিজিটর : )
পাঁচ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নসহ অন্যান্য চিকিৎসকরা। এতে হাসপাতালের বহির্বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগগুলো পুরোপুরি বন্ধ (কমপ্লিট শাটডাউন) রয়েছে। ফলে দূরদূরান্ত থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত হাসপাতাল প্রাঙ্গণে কর্মবিরতি পালন করে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন চিকিৎসকরা। এ সময় পাঁচটি দাবি বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, এমবিবিএস ও বিডিএস ব্যতিত কেউ ডাক্তার উপাধি ব্যবহার করতে পারবে না। ওটিসি ড্রাগস লিস্ট আপডেট করতে হবে। স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসন করতে হবে। মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) ও নিম্নমানের মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ করতে হবে। চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। একই দাবিতে বুধবারও একই কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
পাঁচ দফা দাবির বাইরে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার-সংক্রান্ত রিটের রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এই কর্মসূচি পালন করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিক্যাল কলেজশিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন পোস্টগ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা। ১২ মার্চ এ রায় ঘোষণার তারিখ রয়েছে। মূলত এই রায়কে কেন্দ্র করে গতকাল সোমবার থেকে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন কমপক্ষে এক হাজার মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন। কুমিল্লা ছাড়াও আশপাশের পাঁচ-ছয়টি জেলা থেকে এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন রোগীরা। মঙ্গলবার সকালে ইন্টার্নসহ অন্যান্য চিকিৎসকরা বহির্বিভাগের ফটকে তালা বুলিয়ে দিয়ে কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। এতে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়েন দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীরা।
এর আগে সোমবার হাসপাতালের সহকারী পরিচালক নিশাত সুলতানা স্বাক্ষরিত এক বিশেষ বিবৃতিতে জানানো হয়, সারা দেশে সব মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে পূর্ণাঙ্গ রায় ও পাঁচ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ১০ মার্চ থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং ট্রেইনি চিকিৎসকরা কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সব সরকারি চিকিৎসককে নিজ নিজ বিভাগের সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। উল্লেখ্য যে, জরুরি সেবা (অবস ভর্তি, ক্যাজুয়েলিটি, সিসিইউ, আইসিইউ) চলমান থাকবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক মো.শাহজাহান বলেন, আজসহ দুদিন এই কর্মসূচি পালন করেছেন ইন্টার্নসহ অন্যান্য চিকিৎসকরা। বুধবারও একই কর্মসূচি পালন করা হবে। যেই সময়টাতে মানুষ চিকিৎসা নেয়, আজ সকাল থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত বহির্বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগগুলো ছিল কমপ্লিট শাটডাউন। এ কারণে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষজন সমস্যায় পড়েছেন।
মনোহরগঞ্জ থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী আঞ্জুমান আক্তার বলেন, ‘এটা কেমন কথা। রোগীদের জিম্মি করে আন্দোলন করছেন চিকিৎসকরা। এভাবে আর কতদিন চলবে? শত শত মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।’