মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির অগ্রাধিকার তালিকায় দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান এবং ইরানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিরসন। এসব নিয়ে আলোচনার উদ্দেশে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বৈঠক করতে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) প্যারিস যাচ্ছেন শীর্ষ দুই মার্কিন কর্মকর্তা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বৈঠকে রাশিয়াকে নিয়ে ইউরোপীয়দের উদ্বেগের কথা শুনবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ।
একদিকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার চলমান যুদ্ধ নিয়ে দিন দিন যারপরনাই বিরক্ত ট্রাম্প। অন্যদিকে, ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম প্রতিরোধে প্রয়োজনে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন তিনি।
তবে ইউক্রেন সংকট সমাধানে ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডে বরং আরও বেশি শঙ্কিত ইউরোপীয় নেতারা। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভ্লোদিমির জেলেনস্কিকে চাপে রেখে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সখ্যতাকে সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে দেখছে সবাই।
প্যারিস বৈঠকের পর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকির সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনা করতে শনিবার রোম যাবেন উইটকফ। এর আগে তারা ওমানে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেছিলেন। উভয় পক্ষ গত সপ্তাহের আলোচনাকে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করলেও চুক্তি হওয়া এখনও অনেক দূরের বিষয়।
ট্রাম্প সোমবার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি কোনো সমঝোতা না হয়, তবে তিনি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। পরদিন, তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে শীর্ষ নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে হোয়াইট হাউজে বৈঠক করেন তিনি।
ওমানে অনুষ্ঠিত তেহরান-ওয়াশিংটন বৈঠক নিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোকে আগে থেকে অবহিত করেনি হোয়াইট হাউজ। ফলে বৃহস্পতিবারের প্যারিস বৈঠক দুই পক্ষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্প বরাবরই কঠোর অবস্থান নিয়ে আসছেন। প্রথম মেয়াদেও জেসিপিওএ চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। জয়েন্ট কম্প্রেহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন নামের ওই চুক্তিতে পক্ষ ছিল পারমাণবিক শক্তিধর পাঁচ দেশ ও ইরান।
দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসেও সেই ধারা ধরে রেখেছেন ট্রাম্প। ফেব্রুয়ারি থেকে ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ নীতি প্রয়োগ করছেন। তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন। ইরানকে পারমাণবিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার দুটি উপায় আছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন, হয় চুক্তি নইলে সামরিক চাপে নতি স্বীকার করানো।